প্রিমিয়ার লিগের সঙ্গে এক অদ্ভুত সম্পর্ক বড়দিনের। বড়দিনের পয়েন্ট টেবিল যেন প্রিমিয়ার লিগেরই চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণ করে দেয়। অন্তত প্রিমিয়ার লিগের ভক্তদের এমনটাই বিশ্বাস। সেই বিশ্বাসের পখে-বিপক্ষে যুক্তি আর পরিসংখ্যান দুইই আছে। তবে এমন কিছু একেবারেও অমূলক না। শেষ ১৪ বারের মধ্যে ১০ বারই যে বড়দিনে শীর্ষে থাকা দল প্রিমিয়ার লিগ জিতেছে।
পরিসংখ্যানের পাতায় একটু নজর দেওয়া যাক। আগেই বলা হয়েছে, শেষ ১৪ বারের মধ্যে ১০ বারই যে বড়দিন অর্থাৎ ২৫ ডিসেম্বর টেবিল টপার দলই প্রিমিয়ার লিগ জিতেছে। এদের মধ্যে ২০০৪-০৫ মৌসুম থেকে ২০০৬-০৭ মৌসুম অর্থাৎ টানা ৩ বছর এমন ঘটনা ঘটে। ২০০৯–১০ থেকে ২০১২–১৩ পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটেছে টানা চারবার। দুই বছর বিরতি দিয়ে ২০১৫–১৬ মৌসুম থেকে ২০১৭–১৮ পর্যন্ত আবারুও টানা তিনবার শিরোপা জিতেছে বড়দিনে শীর্ষে থাকা দল।
সবমিলিয়ে প্রিমিয়ার লিগের বর্তমান সংস্করণে ৩২ বারের মধ্যে ১৬ বার বা ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে বড়দিনে শীর্ষে থাকা দলটি মৌসুম শেষে ট্রফি ঘরে তুলেছে। তবে শীর্ষে থাকা দলটি যদি হয় আর্সেনাল বা লিভারপুল, তবে সম্ভাবনার চেয়ে শঙ্কাই বেশি।
শেষ ৫ বার প্রিমিয়ার লিগ আসরে ৩ বারই বড়দিনে শীর্ষে ছিল লিভারপুল। কিন্তু তারা ট্রফি জিতেছে কেবল ২০১৯-২০ মৌসুমে। শেষ ১৫ বারের মধ্যে কেবল ৫ বার বড়দিনে শীর্ষে থাকা দল শিরোপা জেতেনি; যার মধ্যে চারবারই কপাল পুড়েছে লিভারপুলের। আর বাকিটা আর্সেনাল।
আর্সেনাল গত মৌসুমে দুর্দান্ত শুরু করেছিল। বড়দিনের আগে ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে তাদের পার্থক্য ছিল বিস্তর। কিন্তু এরইপরেই একের পর এক পয়েন্ট হারিয়েছে গানার্সরা। শেষ পর্যন্ত শিরোপাও হাতছাড়া হয় তাদের। আর্সেনাল ভক্তদের দুশ্চিন্তা বাড়াতে পারে আরও একটি তথ্য। প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসে এখন পর্যন্ত তিনবার বড়দিনের সময় শীর্ষে ছিল তারা, কিন্তু কোনোবারই শিরোপা জিততে পারেনি।
আর লিভারপুল বড়দিনে সব মিলিয়ে ৬ বার শীর্ষে থেকে শিরোপা জিতেছে একবার। আর এদিক থেকে বরং সুবিধায় আছে ম্যানচেস্টার সিটি। চারবার বড়দিনে শীর্ষে ছিল এবং প্রতিবারই শিরোপা জিতেছে। এমনকি বড়দিনে শীর্ষে না থেকেও তারা শিরোপা জিতেছে ৪ বার।
এবারের লিগে অবশ্য শীর্ষে থাকার সুযোগ আছে লিভারপুল আর আর্সেনালেরই। অলরেডদের পয়েন্ট ৩৮। আর গানার্সরা টেবিলে সবার ওপরে আছে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে। রাতে লিভারপুলের মাঠ অ্যানফিল্ডে খেলবে দুই দল। যারা জিতবে তারাই থাকবে শীর্ষে। আর্সেনালের জন্য অবশ্য ড্র করলেও চলবে। শেষ পর্যন্ত পরিসংখ্যান কাকে সমর্থন দেবে, সেটার ফয়সালা অবশ্য হবে আরও অনেকটা দিন পরে।