দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নওগাঁ-২ (পত্নীতলা ও ধামইরহাট) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল হক মারা গেছেন। শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) ভোরে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আমিনুল হক ২০০৬ সালে নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। তিনি নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক। এছাড়া তিনি ১৯৮৬ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত পত্নীতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিকবার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আমিনুল হকের ছেলে আছিফুল হক তার বাবার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মামলার শুনানিতে অংশ নিতে গত সোমবার ঢাকায় যান আমিনুল হক। ঢাকায় যাওয়ার পর থেকেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। মঙ্গলবার রাতে তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ভোর ৫টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তিনি ডায়াবেটিসজনিত সমস্যা, হৃদরোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন।
আছিফুল হক আরও জানান, শুক্রবার বিকেলে আমিনুল হকের মরদেহ গ্রামের বাড়ি নওগাঁর নজিপুরে পৌঁছাতে পারে। জানাজা শেষে সন্ধ্যায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নওগাঁ-২ আসন থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে চেয়ে আমিনুল হক দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তার মনোনয়নপত্রে বিভিন্ন অসঙ্গগতি তুলে ধরে প্রার্থিতা বাতিল করে দেয়। পরে আমিনুল হক প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার জন্য হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত বুধবার তার প্রার্থিতা বৈধ বলে রায় দেন।
বৃহস্পতিবার নওগাঁ জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে তাকে ঈগল প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতীক পাওয়ার পরদিনই তার মৃত্যু হলো।
নওগাঁ-২ আসনে আমিনুল হক ছাড়া আরও তিনজন প্রার্থী রয়েছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকার, জাতীয় পার্টির প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেন ও আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুল ইসলাম।
প্রার্থীর মৃত্যুর পর ওই আসনের নির্বাচন কার্যক্রম স্থগিত থাকবে কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. গোলাম মওলা বলেন, সকালে সাংবাদিকদের মাধ্যমে নওগাঁ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল হকের মৃত্যুর খবর শুনেছি। তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থীর মৃত্যুতে নির্বাচন কার্যক্রম নিয়ে আইনে কী আছে তা দেখে সিদ্ধান্ত খুব দ্রুত জানানো হবে।