এই স্বাধীন বাংলাদেশে জমিদারি প্রথার কোনো ভাত নাই। এই বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীন থাকতে চায়। নিজের খেয়ে, নিজের পড়ে, নিজের মতো করে বাঁচতে চায়। কাউকে ভয় পেয়ে বাঁচতে চায় না। কথা সত্য কি না। আমি নির্বাচন করছি ট্রাক মার্কায়। সবাই ৭ তারিখে ট্রাক মার্কায় ভোট দিয়ে বিপুল ভোটের মাধ্যমে আমাকে জয়ী করে সেই চৌধুরীকে কাঁন্দাইতে হবে। চৌধুরীকে কাঁদতে হবে। কেন কাঁদবেন তিনি সেদিন বুঝতে পারবেন।
কারণ, তানোর-গোদাগাড়ীর মেহনতি খেটে খাওয়া মানুষ, কৃষক, শিক্ষক তাকে ভালোবাসে না। তিনি শিক্ষককে কান ধরে উঠ-বস করান। শিক্ষককে মারেন। তিনি এতো বড় জমিদার সাহেব হয়ে গেছেন। আমাদের শক্তি বেশি না জমিদারের শক্তি বেশি। জনগণের শক্তি বেশি। আমরা সবাই যদি এক জোট হই তাহলে তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারবো।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তানোরের পাচন্দর ইউনিয়নের কইলবাজারে নির্বাচনী সভায় এসব কথা বলেন রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মহিয়া মাহি। এর আগে বিকেলে মাহি একই ইউনিয়নের ইনদহী বাজার, বনকেশর বাজার ও বানিয়াল স্কুল মাঠে নির্বাচনী সভা করেছেন। এ সময় মাহি ভোটারদের কাছ থেকে ট্রাক প্রতীকে ভোট চান।
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের কাছে এসেছি একটা আবদার নিয়ে। গত ১৫ বছর তো আপনারা একজনকে (বর্তমান সাংসদ) দেখেছেন। ১৫ বছর তো তিনি আপনাদের অনেক উপকার করেছে। ১৫ বছর আপনাদের সঙ্গে অনেক ভালো ব্যবহার করেছেন। তাই না। প্রতিদিন এখানে (কইল বাজার) এসে বসে বসে চা খেয়েছেন, তাই না। কি মাসে মাসে আসছে আপনাদের কাছে- মাহির এমন কথায় উপস্থিত ভোটাররা বলেন- না না আসেননি। তখন মাহি বলেন, একবারও আসেন নাই। ১৫ বছরে কি ১৫ দিনও আসেন নাই, আস্তাগফিরুল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, শোনেন আমি আপনাদেরকে বলি- আমি আজকে আমার কাজ কর্ম ছেড়ে এই নির্বাচনের মাঠে নির্বাচন করতে এসেছি। কেন জানেন, আমার একটাই উদ্দেশ্য। সেটা জানেন, এই তানোর-গোদাগাড়ীর মানুষের কোনো বাক স্বাধীনতা নেই। তারা কোনো কথা বলতে পারে না। তারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারে না। কেন পারে না, ভয়ে পারে না। কেন একটি মানুষকে সবাই এতো ভয় পায়। আজব-একটা সিংহ ছেড়ে দিলেও তো মানুষ এতো ভয় পাবে না। কিন্তু আপনারা ওই চৌধুরীকে (বর্তমান সাংসদ) এতো ভয় পান।
মাহি বলেন, সিনেমায় দেখেছি, এই চৌধুরীকে নিয়ে ডায়লগ দেয়-এই চৌধুরী সাহেব মেহনতি মানুষ আপনার থেকে অনেক শক্তিশালী। কারণ মেহনতি মানুষের সঙ্গে সাধারণ জনগণ থাকে। চৌধুরী সাহেবের হয়তো অনেক টাকা আছে। কিন্তু তার মন নাই, দিল নাই। তিনি মানুষকে ভালোবাসতে পারে না। তিনি আপনাদের সঙ্গে বসে চায়ের দোকানে চা খেতে পারে না। কারণ তার তো অনেক টাকা। তিনি এসি রুমে বসে থাকবেন। আর খালি মানুষকে শাসন করবে, আর ওখান থেকে ভয় দেখাবে। আমি এখানে এসেছি কারণ, এই জমিদারি প্রথার অবসান চাই।
মাহি বলেন, আমরা ৭ তারিখে এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করবো। এই যে ভাইয়ে আপনারা গোপনে কাকে ভোট দিচ্ছেন কেউ জানতে পারবে না। তাহলে কাউকে ভয় করার কোনো কারণ নেই। সাত তারিখে সবাই সাজুগুজু করে নতুন পোশাক পরে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোটটা দেবেন। গোপনে আপনার মন যাকে পছন্দ করে তাকে ভোট দেবেন। এই ৭ তারিখে আরও একবার আপনারা যদি ভুল করেন তাহলে কিন্তু আগামী পাঁচ বছর আবারও কপাল চাপড়াতে হবে।
প্রসঙ্গত, এই আসনে একটানা তিনবারের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনি এবারও আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসন থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।