নানা কৌশলের পরও জাতীয় নির্বাচনের অর্ধেক সংখ্যক আসনও ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ’ করা যাচ্ছে না। প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর সারাদেশের ৩০০ আসনের মধ্যে ১০১টিতে লড়াইয়ের আভাস মিলেছে। বাকি আসনে ভোট হতে যাচ্ছে অনেকটাই একতরফা। এবার ২৭টি নিবন্ধিত দল অংশ নিলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। অন্তত ১১ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর জয়ের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন এই স্বতন্ত্ররাই।
কারণ আওয়ামী লীগ ও সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা) ইতোমধ্যে আসন বণ্টন করেছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলের মধ্যেও আসন সমঝোতা হয়ে গেছে। ফলে ভোটের মাঠে যতটুকু প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনা, তার সবটুকুই আওয়ামী লীগের স্থানীয় পদধারী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ঘিরে। এবারের নির্বাচনে ‘কিংস পার্টি’খ্যাত তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম এবং বিএসপি অনেক আসনে প্রার্থী দিলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এখনও কেউ আসতে পারেনি। প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পরে হাতেগোনা দু-একটি আসন ছাড়া তাদের কেউ আলোচনায় নেই।
সব মিলিয়ে এখন আওয়ামী লীগ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে ২৬৩ আসনে। তবে শরিকদের নিয়ে নৌকা থাকছে ২৬৯ আসনে। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা ২৮৩ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও ২৬ ডিসেম্বর অনেক আসন থেকেই প্রার্থিতা প্রত্যাহারের খবর পাওয়া গেছে।
রাজশাহীর ৩৯ আসনের ১৪টিতে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। আর লড়াই গুলো হবে স্বতন্ত্রের সাথে নৌকার। এর মধ্যে রাজশাহী-১ আসনে আওয়ামী লীগের ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানী ও অভিনেত্রী মাহিয়া মাহির লড়াই লড়াই। তারা তিন জনেই আওয়ামী লীগের লোক।
রাজশাহী-৪ আসনে বর্তমান এমপি এনামুল হকের সঙ্গে লড়াই হবে দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের।
রাজশাহী-৫ আসনে আওয়ামী লীগের আবদুল ওয়াদুদ দারার সঙ্গে দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী ওবায়দুল হকের।
রাজশাহী-৬ আসনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বিরুদ্ধে আছেন আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি, দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী রায়হানুল হক।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামিম উদ্দিন আহমেদ শিমুলের বিরুদ্ধে লড়ছেন দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ নজরুল ইসলাম।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে বর্তমান এমপি জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে আছেন সাবেক এমপি গোলাম মোস্তফা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে বর্তমান এমপি আবদুল ওয়াদুদের সঙ্গে লড়ছেন বিএনএফের আবদুল মতিন।
নাটোর-১ আসনে সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা কাজল রায়ের বিরুদ্ধে লড়তে হবে নৌকার প্রার্থী শহিদুল ইসলাম বকুলকে।
নাটোর-২ আসনে নৌকার প্রার্থী শফিকুল ইসলাম শিমুর বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার।
নাটোর-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধে রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুল ইসলাম শফিক।
নাটোর-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী ডা. সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আসিফ আবদুল্লাহ বিন কুদ্দুস শোভন ও গুরুদাসপুর পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম।
বগুড়া-২ আসনে জাপার বর্তমান এমপি শরিফুল ইসলাম জিন্নাহর সঙ্গে লড়াই হবে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী বিউটি বেগমের।
বগুড়া-৩ আসনে আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী অজয় কুমার সরকারের সঙ্গে লড়ছেন জাপার প্রার্থী বর্তমান এমপি নূরুল ইসলাম তালুকদার।
বগুড়া-৪ আসনে বিএনপির সাবেক এমপি স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. জিয়াউল হক মোল্লা মুখোমুখি হবেন জাসদের রেজাউল করিম তালুকদারের।
সবা আসনে নৌকা ও স্বতন্ত্রের মধ্যে লড়াই হলেও তারা সবাই আওয়ামীলীগ পন্থীর প্রার্থী।