দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন দেখতে দেশের প্রায় ২২ হাজার পর্যবেক্ষক আবেদন করেছেন। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ইসি সূত্র জানায়, সম্প্রতি ৯৬টি দেশি সংস্থাকে পাঁচ বছরের জন্য নিবন্ধন দিয়েছে কমিশন। সে সব সংগঠনের মধ্য থেকে ২১ হাজার ৯৬৯টি আবেদন জমা পড়েছে। বর্তমানে যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে।
ইসির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, শিগগিরই বিষয়টি অনুমোদনের জন্য কমিশনের কাছে নথি উত্থাপন করা হবে। এরপরই চূড়ান্ত হবে কোন সংস্থার কত জন কোন আসনে ভোট দেখার অনুমোদন পেল।
এদিকে, বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অনুমোদনের প্রক্রিয়াও চলছে। ইতোমধ্যে ২২৭ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক, সাংবাদিক আবেদন জানিয়েছেন। এছাড়া ৩৪ দেশ ও চারটি সংস্থাকে ভোট দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইসি।
দেশি নিবন্ধিত সংস্থাগুলো হলো-মানবাধিকার ও সমাজ উন্নয়ন সংস্থা, সেবা সোশ্যাল ফাউন্ডেশন, অগ্রদূত সংস্থা, এক্টিভিটি ফর রিফরমেশন অফ বেসিক নিডস, হাইলাইট ফাউন্ডেশন, মুভ ফাউন্ডেশন, ডেমোক্রেসি ওয়াচ, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ, ডিজঅ্যাবিলিটি ইন কোজিশন এক্টিভিটিস, আজমপুর শ্রমজীবী উন্নয়ন সংস্থা, আব্দুল মমেন মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন, এসডাপ, বিবি আছিয়া ফাউন্ডেশন, লুৎফর রহমান ভূঁইয়া ফাউন্ডেশন, সমাজ উন্নয়ন প্রয়াস, যুব উন্নয়ন সংস্থা, শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র, বঞ্চিতা সমাজ কল্যাণ সংস্থা, কেরানীগঞ্জ হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, এসকে কল্যাণী ফাউন্ডেশন, সোসাইটি ফর সোস্যাল এডভান্সমেন্ট অফ রুরাল পিপল, সেতু রুরাল ডেভলপমেন্ট সোসাইটি, সোসাইটি ফর ট্রেনিং এন্ড রিহেভিলিটেশন, রুরাল অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট, ডেভলপমেন্ট হেল্পিং কী, তালতলা যুব উন্নয়ন সংগঠন, স্বাস্থ্য শিক্ষা সেবা ফাউন্ডেশন, বাঁচতে শেখা, ডপস ফাউন্ডেশন, এসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল ডেভলপমেন্ট অফ বাংলাদেশ, ইনস্টিটিউট ফর এনভারমেন্ট এন্ড ডেভেলপমেন্ট, ভলান্টারি অর্গানাইজেশন ফর সোশ্যাল ডেভলপমেন্ট, ক্রিয়েটিভ সোশ্যাল ডেভলপমেন্ট সেন্টার, জেন্ডার এন্ড এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সোসাইটি, ডেভলপমেন্ট এডুকেশন এন্ড পিস বেসিক, হিউম্যান রাইটস ভয়েস, সমাজ উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, রাজবাড়ি উন্নয়ন সংস্থা, ডেভেলপমেন্ট পার্টনার, গরিব উন্নয়ন সংস্থা, সমাহার, সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা, হাফেজ্জি চ্যারিটেবল সোসাইটি ফর বাংলাদেশ, ডেভলপমেন্ট অফ মহিলা সোসাইটি, সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন, সোশ্যাল ইকুয়ালিটি ফর ইফেক্টিভ ডেভেলপমেন্ট, ইন্টিগ্রেটেড সোসাইটি ফর রেগস অফ হোপ, সমন্বিত নারী উন্নয়ন সংস্থা, পল্লী একতা উন্নয়ন সংস্থা, সোসাইটি ফর হিউম্যান ইম্প্রভমেন্ট এন্ড লাস্টিং ডেভেলপমেন্ট, সেঁজোতি হেলথ এন্ড এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, এসো জাতি গড়ি, ওয়েসভা, সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট এন্ড কো অপারেশন অর্গানাইজেশন, ফোরাম ফোর ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, প্রকাশ গণকেন্দ্র, রুরাল অ্যান্ড আরবান ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন, সার্ভিসেস ফর ইকুইটি এন্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট, তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা, হিউম্যান ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি হিডস, রুরাল অ্যাডভান্সমেন্ট কমিটি ফর বাংলাদেশ, গ্রাম উন্নয়ন কর্ম, ইকো কনসার্ন, মুভমেন্ট ফর সোশ্যাল জাস্টিস, গণ উন্নয়ন কেন্দ্র ও এসো বাঁচতে শিখি (এবাস)।
এছাড়াও ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন অব দ্য রুরাল পূওর (ডরপ), প্রত্যাশা সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা, সোসাইটি ফর রুরাল বেসিক নীড় (স্রাবন), সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন, ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম, রুরাল ভিশন (আরভি), তরফসরতাজ শান্তি সংঘ (টিএসএস) বগুড়া, পিপলস অ্যাসোসিয়েশন ফর সোস্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট (পাশা), পাথওয়ে, এমপাওয়ারমেন্ট থুল অফ দ্য কমন পিপল (এলকপ), জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট, নাইস ফাউন্ডেশন, নারী উন্নয়ন সংস্থা, সুফিয়া হানিফ ফাউন্ডেশন, সোস্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট কমিউনিটি অর্গানাইজেশন (সাকো), সবার তরে আমরা ফাউন্ডেশন (এসটিএএফ) ও বিয়ান মনি সোসাইটিকে নিবন্ধন দিয়েছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি।
এদিকে অগ্রগতি সেবা সংস্থা (আসেস), আল-কোরআন প্রচার সংস্থা (আকপস) বাংলাদেশ, ইন্টারন্যাশনাল আসফ লিগ্যাল এইড ফাউন্ডেশন, এআরডি (অ্যাসোসিয়েশন ফর রুরাল ডেভেলপমেন্ট), বাংলাদেশ মানবাধিকার সমন্বয় পরিষদ (বামাসপ), রাজারহাট স্বাবলম্বী সংস্থা, সংগতি সমাজ কল্যাণ সংস্থা, উদ্ভাবনী মহিলা সংস্থা, ভলান্টারি অর্গানাইজেশন ফর দ্য নীডি (ভন), দিনাজপুর পল্লী উন্নয়ন প্ৰচেষ্টা (ডিপিইউপি), সেলফ ডেভলপমেন্ট ইনিসিয়েটিভ (এসডিআই) ও বেডো আর্থসামাজিক কেন্দ্রও পেল ইসির নিবন্ধন।
অন্যদিকে ভোট আয়োজনকারী সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিভিন্ন দেশ, সংস্থা ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম থেকে আবেদন নেওয়ার সময় শেষ হয়েছে। এক্ষেত্রে ১৫৬ জন পর্যবেক্ষক ও ৭১ জন সাংবাদিক আবেদন করেছেন।
ইসি চারটি সংস্থা ও ৩৪টি দেশের নির্বাচন কমিশনের ১১৪ জনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তাদের বিমান ভাড়া ছাড়া সব স্থানীয় ব্যয় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন বহন করবে।
ইতোমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছে, তাদের একটি কারিগরি বিশেষজ্ঞ টিম ভোট পর্যবেক্ষণ করবে। এই টিমের চার সদস্য বাংলাদেশে চলে এসেছে। এছাড়া কমনওয়েলথ, যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটও ভোট পর্যবেক্ষণ করতে চায়।
ইসির জনসংযোগ শাখার পরিচালক মো. শরিফুল আলম জানিয়েছেন, থাইল্যান্ড, নেপাল, ভারত, ব্রিটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন, ডাচ, ইরাক, ফিলিস্তিন, জর্জিয়া, উগান্ডা, নরওয়ে, বুলগেরিয়া, কঙ্গো থেকে ভোট পর্যবেক্ষণের আবেদন এসেছে।
এছাড়া সংবাদ মাধ্যম এএফপি, এনডিটিভি, নিউইয়র্ক, টাইমস, রয়টার্স, অ্যাসোসিয়েটস প্রেস ইন্ডিয়া, জিজি প্রেস-জাপান, সুইডিশ রেডিও, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দি ন্যাশনাল, জাপানের দি ইয়োমিউরি শিমবুন, জুঙ্গি ফেইহেইট থেকে সাংবাদিকরা ভোটের খবর নিতে আসতে চান। একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিকও আবেদন করেছেন।
অন্যদিকে ভারত, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলংকা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্স, জর্জিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কাজাখস্তান, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, মিশর, তুরস্ক, উজবেকিস্তান, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, সেনেগাল, থাইল্যান্ড, আজারবাইজান, মালয়েশিয়া, মরিশাস, তিউনিশিয়া, ব্রুনাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান, কুয়েত, সৌদি আরব, চীন, জাপান ও সিঙ্গাপুরের নির্বাচন কমিশনকে ভোট দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইসিকে। এছাড়া সার্ক ও ওআইসি মহাসচিব, ফেম্বোসা ও এ-ওয়েব চেয়ারপারসনকেও।
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছেন, বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের আবেদন পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানে হয়েছে। সেখান থেকে যাচাই হয়ে এলে তার ভিত্তিতে অনুমোদন দেবেন কমিশন। সে অনুযায়ী, তারা ভিসা পাবেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।