আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
logo

বিকালে কোলাকুলি রাতেই সহিংস রুপে নৌকার কর্মীরা

Election


আবুল কালাম আজাদ : প্রকাশিত:  ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ১১:৪৯ পিএম

বিকালে কোলাকুলি রাতেই সহিংস রুপে নৌকার কর্মীরা

ভোটের মাঠে আর কোনো প্রকার সহিংসতা করবেন না বলে অঙ্গীকারের কয়েক ঘণ্টা পরই  রাজশাহীর ৪ (বাগমারা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর তিনটি নির্বাচনি অফিস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আসনটির আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে।

এই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক অভিযোগ করে বলেন,২৫ ডিসেম্বর সোমবার বিকালে জেলা রিটার্নিং অফিসারের দপ্তরে নৌকার প্রার্থী কালাম ও আমাকে ডাকা হয়েছিল। সেখানে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার শামীম আহমেদ ও পুলিশ সুপার সাইফুর রহমানসহ সিভিল ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে সুষ্ঠ নির্বাচনের স্বার্থে কালাম ও আমাকে কোলাকুলি করে অঙ্গীকার করান এলাকায় নির্বাচনী সহিংতা যেন না হয়।  তিনি করেছিলেন আর কোনো সহিংসতা হবে না। কিন্তু কালাম সে কথা রাখেনি।

তিনি আরও বলেন, রিটার্নিং অফিসারের পক্ষ থেকে আমাদের দুজনকেই অনুরোধ করা হয়েছে বাগমারায় কোনো প্রকার সহিংসতা না করার জন্য। আমাদের দুজনকে ধরে পরস্পরের সঙ্গে কোলাকুলি করানো হলো। 

কিন্তু কালাম   রিটার্নিং অফিসারের অনুরোধ রাখেননি। কোলাকুলির কয়েক ঘণ্টা পরই গভীর রাতে নৌকা প্রার্থী কালামের সন্ত্রাসী বাহিনী আমার তিনটি নির্বাচনী অফিস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। তিনি কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ রাখতে চায় না।

এনামুল হক আরে বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য কালামের এলাকার ও বাইরের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা এখনো বাগমারায় নম্বর প্লেটবিহীন মটর সাইকেল ও  মাইক্রোবাসে টহল অব্যাহত রেখেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার গভীর রাতে বাগমারার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের মচমইল বাজারের পাশ্ববর্তী সৈয়দপুর মহিলা কলেজের কাছে, একই ইউনিয়নের বাইগাছা ও গণিপুর ইউনিয়নের আঁচিনঘাট এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হকের কাঁচি প্রতীকের নির্বাচনি অফিসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গভীর রাতে এসব অফিসে আগুন দেওয়ায় অফিসে থাকা ভোটার তালিকা, পোস্টার, হ্যান্ডবিল ও প্ল্যাকার্ড পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতিনিধির অভিযোগ পেয়ে ২৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকালে বাগমারা থানা পুলিশ ছাড়াও জেলা পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার  ঘটনাস্থল গুলি পরিদর্শন করেন।

বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ  অরবিন্দ সরকার বলেন, কাঁচি প্রতীকের পৃথক তিনটি নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দেওয়া হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

অন্যদিকে রাজশাহী জেলা রিটার্নিং অফিসার ও রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, রাজশাহীর ছয়টি আসনের মধ্যে রাজশাহী-৪ আসনে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু ঘটনা ঘটছে। নির্বাচনি ক্যাম্প ভাঙচুর, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলা, নির্বাচনি ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে। আমরা ২৫ ডিসেম্বর সোমবার বিকালে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হককে ডেকে কোলাকুলি করিয়ে, কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছি। এরপরও যদি কেউ সহিংসতায় জড়ায় রিটার্নিং অফিসার হিসেবে চূড়ান্ত পদক্ষেপ গ্রহণ ছাড়া কোনো পথ খোলা থাকবে না।

তিনি আরও জানান, আগামী ২৯ ডিসেম্বর বিজিবির টহল শুরু হবে। ইতিমধ্যে বাগমারায় অতিরিক্ত ৪০ জন পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

তবে অভিযোগ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ বলেন, গভীর রাতে কে কারা অফিসে আগুন দিয়েছে কেউ বলতে পারছে না। তবে আমার লোকজন এটা করেনি।

কিন্তুস্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বলেন, নৌকার কর্মী সমর্থকরাই আমার কাঁচি প্রতীকের ক্যাম্পে আগুন দিয়েছে-তা নিয়ে কোনো সংশয় নেই। আমরা পুলিশের কাছেও একই অভিযোগ দিয়েছি।