আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, রবিবার, নভেম্বর ২৪, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
logo

অবশেষে ৪৮ বছর পর প্রমাণ হলো তিনি নির্দোষ


অনলাইনে ডেস্ক: প্রকাশিত:  ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ১২:২২ এএম

অবশেষে ৪৮ বছর পর প্রমাণ হলো তিনি নির্দোষ

এক নারীকে খুনের মামলায় গ্লিন সিমন্সকে প্রথমে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল। পরে আপিলে তা কমিয়ে আজীবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের গ্লিন সিমন্স ১৯৭৪ সালে একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হন এবং বিচারে দোষীসাব্যস্ত হয়ে ৪৮ বছর ধরে কারাভোগ করেছেন। অবশেষ গত মঙ্গলবার আদালত তাকে নির্দোষ ঘোষণা করেছে। দুর্ভাগা সিমন্সের বয়স এখন ৭০ বছর। ১৯৭৫ সালে যখন তাকে খুনের মামলায় দোষীসাব্যস্ত করে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয় তখন তার বয়স ছিল ২২ বছর।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ওকলাহোমা সিটির উপকণ্ঠে একটি মদের দোকানে ডাকাতি করার সময় তিনি এবং তার আরেক সহযোগী ক্যারোলিন সু রজার্স নামে এক নারীকে হত্যা করেন। বিচারে প্রথমে সিমন্সকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও পরে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট সাজা কমিয়ে আজীবন কারাদণ্ড দেয়।

সিমন্স মোট ৪৮ বছর, এক মাস, ১৮ দিন কারাগারে কাটিয়েছেন। যার মধ্য দিয়ে নতুন এক রেকর্ডও গড়েছেন তিনি। সিমন্সই এখন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ দিন কারাভোগ করা নির্দোষ ব্যক্তি।

বিচারের শুরু থেকেই সিমন্স দাবি করেছেন, তিনি হত্যাকাণ্ডের সময় তার নিজ রাজ্য লুইসিয়ানায় ছিলেন। কিন্তু নিজের এই দাবি এতদিন তিনি প্রমাণ করতে ব্যর্থ হন।

বিবিসি জানায়, এ বছর জুলাই মাসে একটি জেলা আদালত সিমন্সের সাজা বাতিল করে দেয়। রায়ে বলা হয়, প্রসিকিউটররা বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের কাছে এই মামলার সব প্রমাণ তুলে দেননি। যেমন, মামলার একজন সাক্ষী অন্য আরো কয়েকজনকেও সন্দেহভাজন হিসেবে সনাক্ত করেছিল।
 
সিমন্স ও ডন রবার্টসের শাস্তি হয়েছিল মূলত এক অপ্রাপ্ত বয়স্ক সাক্ষীর সাক্ষ্যতে। ডাকাতির ঘটনার সময় সে মাথার পেছনে গুলি খেয়েছিল। ওই সাক্ষীকে পুলিশ সন্দেহভাজনদের সনাক্ত করার জন্য নিয়ে আসলে সে সিমন্স ও রবার্টস সহ আরো কয়েকজনকে শনাক্ত করেছিল।

রবার্টস ২০০৮ সালে প্যারলে মুক্তি পায়। সিমন্সকে ছাড়া হয় এ বছর জুলাই মাসে। যখন একটি জেলা আদালত থেকে তার মামলার শুনানি পুনরায় শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

এরপর মঙ্গলবার ওকলাহোমা কাউন্টি ডিস্ট্রিক্ট জজ অ্যামি পালুমবো তাকে নির্দোষ ঘোষণা করেন। রায়ে বিচারক বলেন, “জনাব সিমন্স যে অপরাধে দোষীসাব্যস্ত হয়ে সাজা পেয়ে কারাভোগ করেছেন তিনি আদতে সেই অপরাধ করেননি…আদালত এ বিষয়ে স্পষ্ট এবং সন্তোষজনক প্রমাণ পেয়েছে।”

মঙ্গলবারের রায়ের পর সিমন্স বলেন, “এটা সহনশীলতা এবং দৃঢ়তার একটি শিক্ষা। “কাউকে বলতে দেবেন না যে, এটা অসম্ভব। কারণ, এটা সত্যিই সম্ভব।” ওকলাহোমা রাজ্যে ভুল বিচারে কারাভোগ করা ব্যক্তিরা ক্ষতিপূরণ হিসেবে সর্বোচ্চ এক লাখ ৭৫ হাজার মার্কিন ডলার পান। সিমন্সও এখন এই ক্ষতিপূরণের দাবিদার।

লিভার ক্যান্সারে ভোগা সিমন্স তার ‘গোফান্ডমি’ এর মাধ্যমে অনুদান সংগ্রহ করে বর্তমানে নিজের চিকিৎসা ও জীবন ধারণের ব্যয় নির্বাহ করছেন।