দুধ দিয়ে গোসল করেন আকতারুল ঢালী।
বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার উজলকুর ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামে একযুগের দাম্পত্য জীবনের অবসান ঘটিয়ে ২০ লিটার দুধ দিয়ে গোসল করেছেন আকতারুল ঢালী। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
স্ত্রী ওমেনুর বেগম পঞ্চমবারের মতো ডিভোর্স লেটার পাঠালে গতকাল শুক্রবার তাতে সাক্ষর করেন স্বামী আকতারুল।
সূত্র মতে, ২০১২ সালে উপজেলার গৌরম্ভা ইউনিয়নের প্রসাদনগর গ্রামের ইস্রাফিল ইজারাদারের মেয়ে ওমেনুর বেগমের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয় আকতারুল ঢালী। এই দম্পত্তির আখি মনি (১১) ও আরিফুল ঢালী (৬) নামে দুটি সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে তাদের সংসারে নানান বিষয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মতপার্থক্য চলতে থাকে। প্রায় এক যুগের পথচলায় এর আগে স্ত্রীর কাছ থেকে চারবার ডিভোর্স লেটার পেয়েছেন তিনি। তবে এর আগে ডিভোর্স লেটারে সাক্ষর না করলেও পঞ্চমবার ডিভোর্স লেটারে স্বাক্ষর করেন।
আকতারুল ঢালীর দাদি হামীদা বেগম বলেন, ‘তিনি কয়েকবার ডিভোর্স লেটার পাঠিয়েছেন। আমরা কয়েকবার তাকে ফিরিয়ে এনেছি। এবার শুনলাম ধনী কাউকে নাকি বিয়ে করেছেন।’
এ বিষয়ে আকতারুল ঢালীর মা আমেনা বেগম বলেন, ‘ছেলের বউকে সব সময় নিজের মেয়ের মত দেখেছি। বারবার চলে যাওয়ার পরেও ছেলের বউকে ঘরে ফিরিয়ে এনেছি। আমার ছেলে এবার ডিভোর্স লেটারে সাক্ষর করে দুধ দিয়ে গোসল করেছে।’
এ বিষয়ে আকতারুল বলেন, ‘যদিও বিষয়টি কষ্টের তবুও আমি আনন্দিত। আমি ২০১২ সালে বিয়ের পর থেকে আমার স্ত্রীর সঙ্গে সংসারে নানান ঝামেলায় জর্জরিত। আমার স্ত্রী সংসার করবে না বলে অনেকবার ছেড়ে চলে যায়।’
আকতারুল ঢালী আরো বলেন, ‘আমার স্ত্রী আমাকে এর আগেও চারবার ডিভোর্সের কাগজ পাঠিয়েছে। আমার দুটি সন্তানের দিকে তাকিয়ে আমি কোনোদিন সেই কাগজে স্বাক্ষর করিনি। আমি তাকে অনেকবার বুঝিয়ে সংসারে ফিরিয়ে এনেছি। কিন্তু সে কখনও আমার সংসারে সুখী ছিল না বলে দাবি করে। আমি অনেক নির্যাতন সহ্য করেও সংসার টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এবার সে আমাকে পঞ্চম বারের মতো ডিভোর্সের কাগজ বাড়িতে পাঠায়। আমি আর তার এ নির্যাতন সহ্য করতে রাজি না। তাই আমি তার পাঠানো ডিভোর্সের কাগজে স্বাক্ষর করে দিয়েছি। আমি চাই আমার সাবেক স্ত্রী সুখে থাক।’
উজলকুড় ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শুকুর ফকির বলেন, ‘আকতারুল ঢালীর বিষয়টি আমি অবগত। এর আগে কয়েকবার তাদের বিচার সালিশ করে মীমাংসা করেছি। কিন্তু এবার তার স্ত্রী বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে চলে গিয়ে তাকে ডিভোর্স লেটার দিয়েছে।