চাঁপাইনবাবগঞ্জে সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ অস্ত্রের বড় একটি চালান জব্দ করেছে বিজিবি । দুটি পৃথক অভিযানে ৭ টি বিদেশি অস্ত্র, ১৩ টি ম্যাগাজিন, ২৪২ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ৫১ রাউন্ড মেশিনগানের গুলি এবং ৩৫ বোতল ফেনসিডিল জব্দ করা হয়। এ সময় এক মহিলাকে আটক করা হয়েছে ।
বৃহস্পতিবার বেলা ২ টার দিকে ৫৯ বিজিবি রহনপুর ব্যাটলিয়নের সদর দপ্তরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে ব্যাটেলিয়ান অধিনায়ক লে: কর্নেল গোলাম কিবরিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেন । এ সময় উপস্থিত ছিলেন, রংপুর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খোন্দকার শফিকুজ্জামান, রাজশাহী সেক্টর কমান্ডার কর্নেল ইমরান ইবনে এ রউফ ।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার জন্য এই সীমান্ত এলাকা দিয়ে অস্ত্রের একটি বড় চালান বাংলাদেশ প্রবেশ করবে বলে নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে অধিনায়ক জানতে পারেন।প্রেক্ষিতে সীমান্তে টহল তৎপরতাসহ কঠোর নজরদারী বৃদ্ধি করেন।
গত বুধবার (২০ ডিসেম্বর) বিজিবি দিবসে বিজিবি সদস্যদের ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে অস্ত্র চোরাকারবারীরা অস্ত্রের দুটি চালান সোনামসজিদ এবং চকপাড়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করে। তন্মধ্যে একটি চালান সোনামসজিদ বিওপির সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় অত্র ব্যাটালিয়নের উপ অধিনায়ক মেজর এস.এম.ইমরুল কায়েস এর নেতৃত্বে কয়লাবাড়ী বিজিবি ভেহিক্যাল স্ক্যানার চেকপোষ্টে সিএনজি তল্লাশীকালে একজন মহিলা যাত্রীর পলিথিন ব্যাগে শুটকির মধ্যে ১ টি বিদেশী পিস্তল, ১ টি ম্যাগাজিন ও ৬ রাউন্ড গুলি পাওয়া যায় । পরে মহিলা যাত্রী মোছাঃ রুমি বেগম (৩০) আটক করা হয়।আটক রুমি শিবগঞ্জ উপজেলার ছত্রাজিতপুর এলাকার হুমায়ুন কবিরের মেয়ে ।
অপর একটি অভিযানে চকপাড়া বিওপির সীমান্ত এলাকা দিয়ে বড় একটি অস্ত্র চালান প্রবেশ করবে এমন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে: কর্নেল গোলাম কিবরিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঊনিশবিঘী নামক এলাকার আমবাগানে সুবিধাজনক একটি স্থানে বিজিবি টহল দল কৌশলগত অবস্থান নেয়।
এ সময় চোরাকারবারীরা ভারত হতে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় বিজিবি টহল দল চোরাকারবারীদেরকে চ্যালেঞ্জ করলে তাদের কাছে থাকা ১টি বস্তা ফেলে রাতের অন্ধকারে ভারতের অভ্যন্তরে পালিয়ে যায়। পরে, টহল দল বস্তাটি তল্লাশি করে ৬ টি বিদেশী পিস্তল, ১২ টি ম্যাগাজিন, ২৩৬ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ৫১ রাউন্ড মেশিনগান এর গুলি এবং ৩৫ বোতল ফেন্সিডিল পাওয়া যায়। ৫৯ বিজিবির এ যাবত সবচেয়ে বড় অস্ত্র উদ্ধার অভিযান উল্লেখ করেন ।মামলা করতে আটককৃত আসামী এবং অস্ত্রসমূহ শিবগঞ্জ থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
এছাড়াও রহনপুর ব্যাটালিয়ন গত ১১ মাসে সীমান্ত এলাকায় বিভিন্ন অভিযানে ১১ জন আসামীসহ ২০টি পিস্তল, ৩৭৩ রাউন্ড গুলি এবং ৩২ টি ম্যাগাজিন আটক করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানানো হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে রংপুর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খোন্দকার শফিকুজ্জামান সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি করতে অস্ত্রের চালান আনা হয়েছে । এ ব্যাপারে রিজিয়ন কমান্ডার বলেন,অস্ত্র, গোলাবারুদ, বিস্ফোরক, মাদক এবং চোরাচালানের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নের লক্ষে সীমান্ত এলাকায় অপারেশনাল কার্যক্রম বৃদ্ধি করাসহ বিশেষ টহল পরিচালনা করা হচ্ছে।