
ইসমাঈল আযহার: আমলের দিক থেকে জুমার দিন বিশেষ ফজিলতপূর্ণ। এ দিনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আমল। কোরআন-হাদিসের বহু স্থানে জুমার দিনের মর্যাদার কথা বর্ণিত হয়েছে। রাসুল সা. বলেন, ‘যেসব দিনে সূর্য উদিত হয়েছে এরমধ্যে সর্বোত্তম হলো জুমার দিন।’ জুমার দিনকে মুসলমানদের ঈদের দিন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
জুমার দিনের ফজিলত সম্পর্কে রাসুল সা. বলেন, ‘এক জুমা থেকে অপর জুমা উভয়ের মাঝের (গোনাহের জন্য) কাফ্ফারা হয়ে যায়, যদি কবিরা গোনাহের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়ে থাকে। (মুসলিম শরিফ)
রাসুল সা. অন্য হাদিসে বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন ভালো করে গোসল করে সকাল সকাল মসজিদে আসবে এবং ইমামের নিকটবর্তী হবে এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনবে ও চুপ থাকবে তার জুমার সালাতে আসার প্রত্যেক পদক্ষেপে এক বছরের নামাজ ও রোজা পালনের সওয়াব হবে।’( তিরমিজি শরিফ)
জুমার দিনের গুরুত্বপূর্ণ আমল
১. জুমার দিন গোসল করা। যাদের ওপর ফরজ তাদের জন্য এ দিনে গোসল করাকে রাসুল সা. ওয়াজিব বলেছেন।
২. জুমার নামাজের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করা।
৩. মিস্ওয়াক করা।
৪. উত্তম পোশাক পরিধান করে সাধ্যমতো সাজসজ্জা করা।
৫. মুসল্লিদের ইমামের দিকে মুখ করে বসা।
৬. মনোযোগ সহকারে খুত্বা শোনা এবং খুত্বা চলাকালীন চুপ থাকা- এটা ওয়াজিব।
৭. আগে আগে মসজিদে যাওয়া।
৮. সম্ভব হলে পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়া।
৯. জুমার দিন ও জুমার রাতে বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা এবং বেশি বেশি জিকির করা।
১০. কেউ মসজিদে কথা বললে ‘চুপ করুন‘ এতোটুকুও না বলা।
১১. খুত্বার সময় ইমামের কাছাকাছি বসা। কোনো ব্যক্তি যদি জান্নাতে প্রবেশের উপযুক্ত হয়, কিন্তু ইচ্ছা করেই জুমার নামাজে ইমাম থেকে দূরে বসে, তবে সে দেরিতে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
১২. এতোটুকু জোরে আওয়াজ করে কোনো কিছু না পড়া, যাতে অন্যের ইবাদত ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা মনোযোগে বিঘ্ন ঘটে।
১৩. সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করা। (জুমার দিনে সূরা কাহ্ফ তিলাওয়াত করলে কিয়ামতের দিন আকাশতুল্য একটি নূর প্রকাশ পাবে)
১৪. জুমার নামাজের পূর্বে দুই খুতবার মাঝখানে হাত না উঠিয়ে মনে মনে দোয়া করা।
১৫. হজরত আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত: রাসূল সা. ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন আসরের নামাজের পর না উঠে নিজ স্থানে বসা অবস্থায় ৮০ বার নিম্নে উল্লেখিত দরুদ শরীফ পাড়বে, তার ৮০ বছরের গুনাহ মাফ হবে এবং ৮০ বছরের নফল ইবাদতের সওয়াব লেখা হবে তার আমলনামায়। দুরুদটি হল- ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন নাবিয়্যিল উম্মিইয়্যি, ওয়ালা আলি ওয়া সাল্লিাম তাসলিমা’ অর্থ : হে আল্লাহ তুমি শান্তি ও রহমত বর্ষণ কর উম্মী নবী (যাকে হাতে কলমে শিক্ষা দেওয়া হয়নি) মুহাম্মদ সা. এর ওপর ও তার পরিবার পরিবর্গের ওপর।
১৬. সূর্য ডোবার কিছুক্ষণ আগ থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত গুরুত্বের সাথে জিকির, তাসবীহ ও দোয়ায় লিপ্ত থাকা।
আই.এ/